শেয়ার
করুন

ওয়েবসাইটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা : হাডুডু

September 08

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা : হাডুডু

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হলো হাডুডু। এটি গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত একটি জনপ্রিয় খেলাধুলা। সহজ নিয়ম, দলগত অংশগ্রহণ এবং শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে হাডুডু যুগ যুগ ধরে বাংলার গ্রামে-গঞ্জে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। হাডুডুর সঠিক উৎপত্তি নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, এটি প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে কৃষক সমাজের মধ্যেই উদ্ভূত। মাঠে অবসর সময়ে শারীরিক খেলা ও দলগত প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে এর সূচনা হয়। প্রাচীনকালে খেলা হতো খালি মাঠে বা ধানক্ষেতের পাশে। খেলার সময় খেলোয়াড়রা "হাডুডু" শব্দ উচ্চারণ করতে করতে প্রতিপক্ষের মাঠে ঢুকত। এই শব্দ থেকেই খেলার নামকরণ হয় “হাডুডু”। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন— তামিলনাড়ুতে কাবাডি, পাঞ্জাবে কাবাডি, আবার গ্রামীণ বাংলায় একে বলা হতো হাডুডু।

এই খেলায় খেলোয়াড়রা দুটি দলে বিভক্ত হয়। একদল থেকে একজন প্রতিপক্ষের মাঠে প্রবেশ করে “হাডুডু” উচ্চারণ করতে করতে যতজনকে স্পর্শ করতে পারে, স্পর্শ করেই দ্রুত নিজের দলে ফিরে আসে। প্রতিপক্ষ তাকে আটকানোর চেষ্টা করে। যে দল বেশি পয়েন্ট সংগ্রহ করে, সেই দল বিজয়ী হয়। হাডুডু খেলায় শারীরিক ফিটনেস, গতি ও কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল একটি খেলা নয়, বরং গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক।

হাডুডু আন্তর্জাতিক ক্রীড়াজগতে কাবাডি (Kabaddi) নামে পরিচিত এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়। বাংবাংলাদেশ সরকার হাডুডু-কে জাতীয় খেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলার পরিচিতির জন্য এটি কাবাডি নামে প্রচলিত হয়। হাডুডু শুধু একটি খেলা নয়, এটি বাংলার মানুষের আত্মপরিচয়, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। আজ আধুনিক ক্রীড়ার ভিড়ে এ খেলার প্রচলন কিছুটা কমলেও, হাডুডু এখনো বাংলাদেশের গর্বের প্রতীক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছে।