শেয়ার
করুন

ওয়েবসাইটি শেয়ার করুন

বাংলার প্রথম স্বাধীন সাম্রাজ্য: গৌড় রাজ্য

July 27

বাংলার প্রথম স্বাধীন সাম্রাজ্য: গৌড় রাজ্য

বাংলার ইতিহাসে প্রথম স্বাধীন সাম্রাজ্য হিসেবে গৌড় রাজ্যের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত। এই রাজ্যটি শুধু রাজনৈতিক শক্তির প্রতীকই ছিল না, বরং ধর্ম, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের দিক থেকেও ছিল অনন্য। গৌড় রাজ্যের উত্থান ঘটে সপ্তম শতকের শুরুর দিকে, যখন বাংলার উত্তর-পশ্চিমাংশে শশাঙ্ক নামক এক শক্তিশালী শাসক রাজত্ব শুরু করেন। ইতিহাসে তিনিই বাংলার প্রথম স্বাধীন হিন্দু শাসক হিসেবে স্বীকৃত। শশাঙ্ক একজন দক্ষ শাসক এবং কৌশলী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন গৌড় বা লক্ষণাবতীতে, যা বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় অবস্থিত। শশাঙ্ক মগধ, উড়িষ্যা এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলো দখল করে তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তার করেন এবং নিজেকে “রাজাধিরাজ” বা রাজাদের রাজা বলে ঘোষণা করেন।

ধর্মীয় দিক থেকে শশাঙ্ক ছিলেন হিন্দুধর্মের একজন পৃষ্ঠপোষক। যদিও তখন বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রচলন ছিল, তবুও শশাঙ্ক হিন্দু মন্দির নির্মাণ, দেব-দেবীর পূজা এবং ধর্মীয় সংস্কারের মাধ্যমে হিন্দুধর্মকে উৎসাহিত করেন। গৌড় রাজ্যের শাসনামলে বাংলায় স্থাপত্য, সাহিত্য এবং শিল্পের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। শশাঙ্কের মৃত্যুর পর তাঁর সাম্রাজ্যের শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে এবং এক সময় তা পরাভূত হয়। পরবর্তীতে পাল রাজবংশ বাংলায় নতুন করে একটি সুসংগঠিত ও শক্তিশালী সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করে।

গৌড় রাজ্য শুধু বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসেই নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দিক থেকেও এক গৌরবময় অধ্যায় রচনা করে গেছে। শশাঙ্কের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই রাজ্যই বাংলাকে প্রথম স্বাধীন পরিচয় এনে দেয়।