June 02
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত মহাস্থানগড় (Mahasthangarh) প্রাচীন সভ্যতা ও ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন। এটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম নগরী হিসেবে পরিচিত এবং বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। ঢাকা থেকে দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। মহাস্থানগড়ের ইতিহাস প্রায় ২,৫০০ বছরের পুরনো। এটি প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন নগর (Pundranagara) ছিল, যা মৌর্য, গুপ্ত ও পাল রাজাদের রাজত্বকালে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে এখানে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল।
মহাস্থানগড় এলাকায় একাধিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ও ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: গোকুল মেধ (Behula Lakshindar's Basor Ghar) – এটি একটি বড় বৌদ্ধ স্তূপ বলে ধারণা করা হয়, পরাশুরাম প্যালেস, খোদার পাথর ভান্ডার, ও শিলা লিপি। এখানে খননের মাধ্যমে বহু প্রাচীন মুদ্রা, মূর্তি, সিরামিক পণ্য এবং অন্যান্য নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে।
মহাস্থানগড় হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম—তিনটি ধর্মীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন বহন করে। এই কারণে এটি বাংলাদেশের অন্যতম ধর্মীয় ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে বিবেচিত। মহাস্থানগড়ে গেলে আপনি দেখতে পারবেন: প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, প্রাচীন দুর্গের প্রাচীর, গোকুল মেধ, বেহুলার বাসর ঘর। মহাস্থানগড় শুধু একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান নয়, এটি বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত সাক্ষী। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ইতিহাস শেখার এক বাস্তবভিত্তিক ও মনোমুগ্ধকর স্থান।