শেয়ার
করুন

ওয়েবসাইটি শেয়ার করুন

বাংলা ভাষা আন্দোলন: আত্মত্যাগের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠা

May 20

বাংলা ভাষা আন্দোলন: আত্মত্যাগের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠা

বাংলাদেশের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হলে দুটি অংশ—পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান—একত্রিত হয়। কিন্তু তখনকার পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রভাষা হিসেবে শুধু উর্দুকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, যা পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি এক বিরাট অবিচার ছিল। এর প্রতিবাদে বাংলাভাষী জনগণ বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও বুদ্ধিজীবীরা সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ শুরু করে।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। সেদিন পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরও অনেক তরুণ প্রাণ হারান। এই আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রাম এক নতুন মাত্রা পায় এবং অবশেষে ১৯৫৬ সালে বাংলা রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি লাভ করে। এই আন্দোলন শুধু ভাষার জন্য সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল সাংস্কৃতিক পরিচয়, অধিকার ও আত্মমর্যাদার জন্য এক ঐতিহাসিক প্রতিরোধ। পরবর্তীতে ২১ ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে UNESCO স্বীকৃতি দেয়, যা আজ বিশ্বব্যাপী ভাষার অধিকার ও বৈচিত্র্যের প্রতীক।

বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন আমাদের জাতীয় পরিচয়ের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে এবং আমাদের মনে সাহস, আত্মবিশ্বাস ও ঐক্যের বীজ বপন করেছে। এটি শুধু ইতিহাস নয়, একটি প্রেরণা—নিজের অধিকার ও পরিচয়ের জন্য দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর এক অমর শিক্ষণীয় বার্তা।