May 14
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি হিসেবে সাধারণভাবে চন্দ্রাবতীকে (Chandrabati) বিবেচনা করা হয়। তিনি ১৬শ শতাব্দীতে (প্রায় ১৫৫০ খ্রিষ্টাব্দে) বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জের কাছাকাছি অঞ্চলে (পাঠাধাই বা ধানু নদীর তীরবর্তী গ্রাম) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা দ্বিজ বংশীদাস নিজেও একজন কীর্তন কবি ছিলেন। চন্দ্রাবতী বাংলা ভাষায় রামায়ণের একটি নারীনির্ভর পুনর্নির্মাণ রচনা করেছিলেন। চন্দ্রাবতীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম হলো —“চন্দ্রাবতীর রামায়ণ” – এটি রামায়ণের একটি ব্যতিক্রমধর্মী পুনর্লিখন, যেখানে কাহিনিটি নারীর (বিশেষত সীতার) দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি পুরুষতান্ত্রিক নায়কের (রামের) পরিবর্তে নারীর কষ্ট ও আত্মত্যাগকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর লেখা পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয়নি, তবে যে অংশ পাওয়া যায়, তা সাহিত্যিক ও গবেষণামূল্যপূর্ণ। তাঁর রচিত অন্যান্য কিছু কবিতাও পাওয়া যায়, তবে তাঁর রামায়ণই তাঁকে বাংলা সাহিত্যে স্মরণীয় করে রেখেছে। চন্দ্রাবতীর মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় জানা যায় না, তবে ধারণা করা হয় তিনি কম বয়সেই মারা যান। তাঁর সাহিত্যচর্চা ও দৃষ্টিভঙ্গি পরবর্তীকালে নারীবাদী লেখালেখিতে গভীর প্রভাব ফেলে। চন্দ্রাবতী শুধু একজন কবি নন—তিনি ছিলেন সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা এক চিন্তাবিদ। তাঁর সাহিত্যকর্ম আমাদের নারীর দৃষ্টিতে ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতিকে দেখার নতুন চোখ দেয়।