September 16
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানে অধিকাংশ মানুষ কৃষির সঙ্গে যুক্ত এবং কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। দেশের জলবায়ু, মাটি ও ভূপ্রকৃতি বিভিন্ন ধরনের শস্য ও ফসল উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বাংলাদেশে শস্য বলতে সাধারণত ধান, গম, ভুট্টা, ডাল, পাট ইত্যাদি বোঝানো হয়।
১. ধান
ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য এবং জাতীয় জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ধান তিন মৌসুমে উৎপন্ন হয়: আউশ, আমন ও বোরো।
দেশের মোট আবাদযোগ্য জমির প্রায় ৭৫% ধান চাষের জন্য ব্যবহৃত হয়।
২. গম
ধানের পরেই গম বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য। শীতকালীন রবি মৌসুমে গম চাষ করা হয়। রুটি, বিস্কুট, পাউরুটি ইত্যাদির প্রধান কাঁচামাল গম।
৩. ভুট্টা
বর্তমানে ভুট্টা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য ও পশুখাদ্যের উৎস। ভুট্টা দিয়ে মুরগি ও মাছের খাদ্য তৈরি হয়। এছাড়াও ভুট্টা মানুষের খাবার, কর্ন অয়েল ও শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হয়।
৪. ডাল
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ডাল উৎপন্ন হয় যেমন— মসুর, মুগ, মাষকলাই, ছোলা ইত্যাদি। ডাল প্রোটিনের অন্যতম উৎস।
৫. পাট
এক সময় বাংলাদেশ “সোনার বাংলা” নামে পরিচিত ছিল পাট উৎপাদনের জন্য।
পাট থেকে তৈরি হয় দড়ি, বস্তা, কার্পেট, চট ইত্যাদি। পাট আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি ফসল।
বাংলাদেশের প্রধান ফসল: শস্য ছাড়াও বাংলাদেশে নানা ফলমূল ও অর্থকরী ফসল জন্মে। আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেয়ারা, নারকেল, জাম, আমড়া, তরমুজ, বাঙ্গি ইত্যাদি বিভিন্ন ফল বিভিন্ন মৌসুমে পাওয়া যায়। কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল।
অর্থকরী ফসল
আখ – চিনি, গুড় ও মদ তৈরিতে ব্যবহৃত।
চা – সিলেট ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে চা বাগান বিখ্যাত।
পাট – দেশের ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী ফসল।
সরিষা – ভোজ্য তেল উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আলু – দেশের অন্যতম প্রধান সবজি ও খাদ্য ফসল।
বাংলাদেশের কৃষির গুরুত্ব: কৃষি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। কৃষিজাত পণ্য থেকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। জনসংখ্যার একটি বড় অংশের জীবিকা কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অর্থনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।
বাংলাদেশের শস্য ও ফসল কেবল মানুষের খাদ্যের জোগানই দেয় না, বরং দেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির মূলভিত্তি তৈরি করে। সময়ের সাথে সাথে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৃষকের পরিশ্রমে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।
September 08
September 02
August 24