August 31
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে গীতাঞ্জলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। "গীতাঞ্জলি" শব্দের অর্থ হলো গানের অর্ঘ্য, যা মূলত মানুষের আত্মার ভক্তিমূলক নিবেদন। বাংলায় লেখা এই গ্রন্থে মোট ১৫৭টি কবিতা রয়েছে। তবে ১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথ নিজেই কিছু কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেন এবং "Gitanjali: Song Offerings" নামে প্রকাশ করেন, যেখানে কবিতার সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৩টি। গীতাঞ্জলির কবিতাগুলোতে কবি জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে ঈশ্বরকে উপলব্ধি করার বার্তা দিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন, ঈশ্বর দূরে নয়, মানুষের হৃদয়ের মধ্যেই বিরাজমান। এই কাব্যে ভক্তি, আত্মসমর্পণ, মানবপ্রেম ও আধ্যাত্মিকতার মিলন ঘটেছে। কবি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের চিরন্তন সম্পর্কের কথাও সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলির জন্য রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম অ-ইউরোপীয় লেখক হিসেবে এই মর্যাদা অর্জন করেন, যা বিশ্বসাহিত্যে ভারতীয় সাহিত্যকে নতুনভাবে পরিচিত করায়। এই কাব্যগ্রন্থ ইউরোপীয় পাঠকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয় এবং রবীন্দ্রনাথ "বিশ্বকবি" খেতাব পান। গীতাঞ্জলি শুধু কাব্যগ্রন্থ নয়, এটি এক ধরনের প্রার্থনাগীতি যা পাঠকের মনকে আধ্যাত্মিকতার পথে পরিচালিত করে। কবির অনেক কবিতা গান হিসেবেও জনপ্রিয় হয়েছে, যা আজও রবীন্দ্রসংগীত হিসেবে পরিবেশিত হয়। ফলে গীতাঞ্জলি কেবল সাহিত্য নয়, সংগীত ও দর্শনের এক অনন্য সম্পদ হিসেবেও বিবেচিত।