May 14
২০২৩ সালের গ্রীষ্মে কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণায় চরম গরমে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় শরীর দ্রুত তাপ নিয়ন্ত্রণ হারায়, যা ‘আনকমপেনসেবল হিট স্ট্রেস’ নামে পরিচিত।
একটি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম কক্ষে ১২ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীর পর্যবেক্ষণ করা হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে বাড়তে থাকে। এটি প্রমাণ করে, শরীরের টিকে থাকার সীমা আগে ধারণা করা ৩৫ ডিগ্রি নয়, বরং ২৬–৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওয়েট বাল্ব তাপমাত্রা-র মধ্যেই বিপদজনক। এই পরিস্থিতিতে শরীর ঘাম দিয়ে তাপ বের করতে পারে না, ফলে অভ্যন্তরীণ তাপ বাড়তে থাকে এবং হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ ঘণ্টা ধরে এমন পরিস্থিতিতে থাকলে হিটস্ট্রোক হতে পারে।
বিশেষত বয়স্ক মানুষ, শারীরিক দুর্বলতা, এবং যারা বাইরে কাজ করেন—তাঁদের জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক। ভবিষ্যতে যদি গড় তাপমাত্রা মাত্র ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়, তাহলে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল বয়স্কদের জন্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠতে পারে।
গবেষণায় আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার মতো গরম ও আর্দ্র অঞ্চলগুলোর উপর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে, যার মধ্যে বাংলাদেশও ঝুঁকিপূর্ণ। একইসঙ্গে, ইউরোপে ২০২৩ সালে হিট ওয়েভে ৪৭,০০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, এবং ১৯৯৯–২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে হিট-স্ট্রেসজনিত মৃত্যুর হার দ্বিগুণ হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে এবং তা এখনই মানুষের শরীরের সহ্যক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই তথ্য আমাদের সতর্ক করে দেয়—হিট ওয়েভ মোকাবেলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।