শেয়ার
করুন

ওয়েবসাইটি শেয়ার করুন

দুর্গেশনন্দিনী- বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক উপন্যাস

May 04

দুর্গেশনন্দিনী- বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক উপন্যাস

বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক উপন্যাস হিসেবে সাধারণভাবে দুর্গেশনন্দিনী উপন্যাসটিকে গণ্য করা হয়, যার লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৮৬৫ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসটি  বাংলা ভাষায় লেখা বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম সার্থক উপন্যাস। উপন্যাসটির পটভূমি ১৬শ শতকের মাঝামাঝি সময়ের মুঘল ও পাঠান যুগ। এই সময় বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল। গল্পটি মূলত ঐতিহাসিক ঘটনার পটভূমিতে সাজানো হলেও এতে কল্পনাপ্রসূত প্রেম এবং সাহসিকতার উপাদান রয়েছে। উপন্যাসটির বৈশিষ্ট্য ও সাহিত্যিক গুরুত্ব এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সফল আধুনিক উপন্যাস, যেখানে কাহিনি ও চরিত্রগুলোর যথাযথ বিন্যাস রয়েছে। ভাষা ছিল চিত্রময় ও পরিশীলিত, যা পাঠকদের নতুন অভিজ্ঞতা দেয়। প্রথমবারের মতো বাংলা সাহিত্যে ঐতিহাসিক পটভূমি-কে রোমান্টিক কাহিনির সঙ্গে যুক্ত করা হয়। নারী চরিত্রগুলোর ব্যক্তিত্ব, সাহস ও আত্মমর্যাদার চিত্রায়ণ ছিল সময়ের তুলনায় অগ্রগামী। প্রধান চরিত্রসমূহ দুর্গেশনন্দিনী – উপন্যাসের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র। সাহসী, রোমান্টিক এবং এক আদর্শ নারীচরিত্র। জিমুতবাহন – দুর্গেশনন্দিনীর প্রেমিক, একজন সাহসী ও প্রগতিশীল যুবক। বীরেন্দ্রসিংহ – দুর্গেশনন্দিনীর পিতা, এক যোদ্ধা ও রাজপুরুষ। অয়নঘোষ – একটি ধূর্ত চরিত্র, উপন্যাসে দ্বন্দ্ব ও নাটকীয়তা সৃষ্টি করে। উপন্যাসটিতে প্লট, চরিত্র নির্মাণ, সংলাপ, বর্ণনা এবং কাহিনির গঠন আধুনিক উপন্যাসের কাঠামো অনুযায়ী রচিত। এতে ইতিহাস, প্রেম, নাটকীয়তা ও কল্পনার মিশ্রণ দেখা যায়—যা পরবর্তীতে বাংলা উপন্যাসে ধারাবাহিক প্রভাব ফেলেছে। এই উপন্যাসের ভাষা ছিল সাহিত্যের জন্য উপযুক্ত, পরিশীলিত এবং পাঠকপ্রিয়। উপন্যাসটি 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকায় প্রথম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।