March 09
লবণ আমাদের খাদ্য ও শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান, যার মূল উপাদান সোডিয়াম ক্লোরাইড। সাধারণ লবণের সঙ্গে আয়োডিন মিশিয়ে তৈরি হয় আয়োডিন লবণ, যা শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশে সাহায্য করে।
লবণের ইতিহাস বহু পুরোনো। ছয় হাজার বছর আগে ইউরোপে লবণের খনি পাওয়া যায়, যা এখনকার অস্ট্রিয়া ও বুলগেরিয়ায় অবস্থিত। চীন তার আগেই লবণ আহরণ ও উৎপাদনের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল। লবণের গুরুত্ব এত বেশি ছিল যে, এর আশপাশে অনেক শহর গড়ে ওঠে, যেমন—অস্ট্রিয়ার সালজবুর্গ ও হলস্টল, স্কটল্যান্ডের সল্টকোটস, এবং গ্রিসের প্রাচীন হালিপেডন।
প্রাচীন মিসরীয়রা লবণকে পবিত্র মনে করত এবং মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহার করত। লবণ বাণিজ্যের জন্য বিশেষ রাস্তা তৈরি হয়েছিল, যেমন রোমানদের ‘ভায়া সালারিয়া’ এবং সাহারা মরুভূমির লবণ বাণিজ্যপথ।
লবণ কখনো মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন রোমান সৈন্যদের বেতন লবণ দিয়ে দেওয়া হতো, যা থেকে ‘সোলজার’ ও ‘স্যালারি’ শব্দের উৎপত্তি। লবণের ওপর কর আরোপের কারণে অনেক বিদ্রোহ ও বিপ্লব হয়েছে, যেমন স্পেনে ডাচ বিদ্রোহ, ফ্রান্সে গ্যাবেলে করের বিরুদ্ধে আন্দোলন, এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গান্ধীর ‘লবণ আইন অমান্য অভিযান’।
লবণ সম্পর্কিত লড়াই ও যুদ্ধও ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য, যেমন ইতালির ভেনিস ও জেনোয়ার যুদ্ধ এবং নেপোলিয়নের মস্কো অভিযান ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল সেনাদের জন্য পর্যাপ্ত লবণ না থাকা।
এভাবে, লবণ শুধু আমাদের জীবনের প্রয়োজনীয় উপাদানই নয়, এটি ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।